রেচন কী? রেচনতন্ত্র কী? বৃক্কের গঠন ও কাজ।

রেচন পদার্থ কী?

অপচিতি মূলক বিপাক এর ফলে দেহে যেসব নাইট্রোজেনঘটিত দূষিত পদার্থ উৎপন্ন হয় সেগুলােকে রেচন পদার্থ বলে।

রেচন কী?

অপচিতি মূলক বিপাক এর ফলে দেহে যেসব নাইট্রোজেনঘটিত দূষিত পদার্থ উৎপন্ন হয় সেগুলােকে রেচন পদার্থ বলে।

রেচনতন্ত্র কী?

যে তন্ত্রের মাধ্যমে এসব বর্জ্য দেহ থেকে অপসারিত হয় তাকে রেচনতন্ত্র (excretory/urinary/renal system) বলে।

মানুষের প্রধান রেচন পদার্থ

মানুষের প্রধান রেচন পদার্থগুলাে অ্যামােনিয়া, ইউরিয়া, ইউরিক এসিড, ইউরােক্রোম ইত্যাদি।

মানব রেচনতন্ত্রের অংশ

প্রধান রেচন অঙ্গ হলো বৃক্ক। মানব রেচনতন্ত্র নিম্নলিখিত অঙ্গসমূহের সমন্বয়ে গঠিত। যথা-

  • ১. একজোড়া বৃক্ক (kidney)
  • ২. এক জোড়া রেচননালী বা গবিনী বা ইউরেটার (ureter)
  • ৩. একটি মূত্র থলি (urinary bladder) এবং
  • ৪. একটি মূত্রনালী (Urethra)
রেচন কী? রেচনতন্ত্র কী? বৃক্কের গঠন ও কাজ।

বৃক্কের গঠন ও কাজ (Structure and function of kidney)

বৃক্কের অবস্থান

মানুষের উদরগহ্বরের পশ্চাৎভাগে মেরুদন্ডের উভয় পাশে একটি করে মােট দুটি বৃক্ক থাকে।

বৃক্কের পরিমাপ

প্রাপ্ত বয়ষ্ক মানুষের প্রতিটি বৃক্ক প্রায় ১১-১২ সে.মি. লম্বা, ৫-৬ সে.মি. প্রস্থ এবং ৩ সে.মি. পুরু হয়।

বৃক্কের রং

সজীব অবস্থায় বৃক্কের রং খয়েরি লাল।

বৃক্কের আকৃতি

আকৃতিতে বৃক্ক অনেকটা শীম বীজের মত।

বৃক্কের বহিঃগঠন

বৃক্কের বাইরের দিক উত্তল এবং ভেতরের দিক অবতল। অবতল অংশের ভাঁজকে হাইলাম (hilum) বলে। এর ভেতর দিয়ে ইউরেটার ও রেনাল শিরা বের হয় এবং রেনাল ধমনী ও স্নায়ু বৃক্কে প্রবেশ করে। সমগ্র বৃক্ক স্বচ্ছ, পাতলা পেরিটোনিয়াম ঝিল্লী দ্বারা আবৃত থাকে।

বৃক্কের অন্তঃগঠন

বৃক্কের লম্বচ্ছেদ করলে মোট ৫টি অংশ দেখা যায়। যথা-

১. ক্যাপসুল (Capsule) :

এটি বৃক্কের চারদিক ঘিরে তন্তুময় যােজক কলা নির্মিত একটি পাতলা আবরণ।

২. কর্টেক্স (Cortex) :

বৃক্কের বাইরের গাঢ় লালচে-বাদামী অংশটি কর্টেক্স। এটি অসংখ্য ক্ষুদ্র রেচন একক নেফ্রন নিয়ে গঠিত।কর্টেক্স বহিঃস্থ ও অন্তঃস্থ কর্টিক্যাল (cortical) অঞ্চল নিয়ে গঠিত।অন্তঃকর্টেক্স জাক্সট্রামেডুলারি (juxtamedulary) অঞ্চল নামক দুটি অঞ্চলে বিভক্ত। কর্টেক্স অঞ্চলে নেফ্রনের রেনাল করপাসল,মালপিজিয়ান ও প্যাচানাে নালিকা অবস্থান করে।

৩. মেডুলা (Medulla) :

বৃক্কের প্রাচীরের ভেতরের অংশটি মেডুলা। এটি কালচে বর্ণের হয়। এখানেও নেফ্রন থাকে।মেডুলা ৮-১৮টি রেনাল পিরামিড (renal pyramid) নিয়ে গঠিত। রেনাল পিরামিড অণুদৈর্ঘ্যভাবে ডােরাকাটা এবং কোণাকার অঞ্চল নিয়ে গঠিত। প্রতিটি পিরামিড শীর্ষে প্যাপিলায় শেষ হয়। প্যাপিলা হাইলামের দিকে নির্দেশিত।

৪. পেলভিস (Pelvis) :

বৃক্কের হাইলামের নিকট একটি বড় ফানেলাকৃতি অংশ থাকে। একে পেলভিস বলে। পেলভিস মূত্র সংগ্রহ করে এবং ইউরেটারে সরবরাহ করে।

৫. পিরামিড (Pyramid) :

বৃক্কের মেডুলা অঞ্চলে অনুদৈর্ঘ্যভাবে সাজানাে ৬-১৫টি পিরামিডের মত গঠন থাকে। এদেরকে রেনাল পিরামিড বলে।

৬. হাইলাম (Hilum) –

বৃক্কের অবতল অংশের ভাঁজকে হাইলাম বলে।

৭. প্যাপিলা (Papilla)-

পিরামিডের শীর্ষপ্রান্তকে প্যাপিলা বলে।

বৃক্কের কাজ

  1. রক্ত থেকে প্রােটিন বিপাকে সৃষ্ট নাইট্রোজেন জাতীয় বর্জ্য অপসারণ করা।
  2. রক্তে অম্ল ও ক্ষারের ভারসাম্য রক্ষা করা।রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা।
  3. দেহের পানির ভারসাম্য রক্ষা করা।
  4. দেহে সােডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্লোরাইড ইত্যাদির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা।
  5. দেহের পানির ভারসাম্য রক্ষা করা।

Leave a Comment