Table Of Contents
ক্রসিংওভার কি?
এক জোড়া সমসংস্থ ক্রোমােসােমের দুটি নন সিস্টার ক্রোমাটিড এর মধ্যে অংশের বিনিময়কে ক্রসিংওভার বলা হয় ।
আবিষ্কার
থমাস হান্ট মর্গান (১৯০৯) ভুট্টা উদ্ভিদে প্রথম ক্রসিংওভার সম্পর্কে ধারণা দেন।
ক্রসিংওভারের কৌশল
- প্রথমে দুটি নন সিস্টার ক্রোমাটিড একই স্থান বরাবর ভেঙ্গে যায়, পরে একটি অংশের সাথে অপরটির অন্য অংশ পুনরায় জোড়া লাগে।
- ফলে কায়াজমা (‘X’ আকৃতি) সৃষ্টি হয়।
- শেষ পর্যায়ে প্রায়করণের মাধ্যমে ক্রোমাটিডের বিনিময় শেষ হয়।
- ক্রসিংওভারের ফলে ক্রোমাটিডের মধ্যে অংশের বিনিময় ঘটে, সাথে সাথে জিনেরও বিনিময় ঘটে (যেহেতু জিন ক্রোমােসােমেই বিন্যাস্ত থাকে)।
- জিন এর বিনিময়ের ফলে চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের বিনিময় হয়,ফলে জীবে চারিত্রিক পরিবর্তন ঘটে।

ক্রসিংওভারের তাৎপর্য
কিছু সংখ্যক নিম্নশ্রেণির জীব ছাড়া সকল উদ্ভিদ ও প্রাণীর মধ্যে ক্রসিংওভার ব্যাপকভাবে সংঘটিত হয়। ক্রসিংওভারের তাৎপর্য উল্লেখ করা হলাে-
- ক্রসিংওভারের ফলে দুটি ক্রোমাটিডের মধ্যে অংশের বিনিময় ঘটে, ফলে জিনগত পরিবর্তন সাধিত হয়।
- জিনগত পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট জীবে বৈশিষ্ট্যগত পরিবর্তন ঘটে।
- বৈশিষ্ট্যগত পরিবর্তনের মাধ্যমে জীবকূলে আসে বৈচিত্র্য, সৃষ্টি হয় নতুন পরিবেশে টিকে থাকার ক্ষমতা, আবার কখনও সৃষ্টি হয় নতুন প্রজাতি।
- ক্রসিংওভারের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত উন্নত বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন নতুন প্রকরণ সৃষ্টি করা যায়। এভাবেই ফসলি উদ্ভিদের ক্রমাগত উন্নতি সাধন করা যায়।
- কৃত্রিম উপায়ে ক্রসিংওভার ঘটিয়ে বংশগতিতে পরিবর্তন আনা সম্ভব। কাজেই প্রজনন বিদ্যায় ক্রসিংওভারের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে।
- গবেষণার ক্ষেত্রেও ক্রসিংওভারের তাৎপর্য রয়েছে। কারণ ক্রোমােসােমে জিনের রেখাকার বিন্যাস প্রমাণে বা ক্রোমােসােম ম্যাপিং এ ক্রসিংওভারের ফলে সৃষ্ট ব্যতিক্রমী বৈশিষ্ট্য ব্যবহৃত হয়।
এভাবেই মায়ােসিস কোষ বিভাজনের পাশাপশি ক্রসিংওভার জীবের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।