প্রাণিজগৎ এর প্রধান বিভাগ সমূহ।
পৃথিবীর সকল প্রাণী নিয়ে গঠিত জগতকে প্রাণিজগত বা প্রাণিরাজ্য বলে। প্রাণিদেহে অবস্থিত কোষের সংখ্যা অনুসারে প্রাণিজগতকে দুটি উপ-জগতে (Sub-Kingdom) ভাগ করা হয়ছে, যথা-
ক। প্রােটোজোয়া (Protozoa)
যে সব প্রাণীর দেহ একটিমাত্র কোষ নিয়ে গঠিত, তাদের প্রােটোজোয়া বা এককোষী প্রাণী বলে। এ উপ-জগত একটিমাত্র পর্ব নিয়ে গঠিত। এ পর্বটি হলাে– Protozoa (প্রােটোজোয়া)।
খ। মেটাজোয়া (Metazoa)
যে সব প্রাণীর দেহ একাধিক কোষ নিয়ে গঠিত তাদের মেটাজোয়া বা বহুকোষী প্রাণী বলে। কলাতন্ত্রের উৎপত্তি অনুসারে মেটাজোয়াদের দুটি ভাগে ভাগ করা হয়, যথা-
১। প্যারােজোয়া (Parazoa)
এ সব বহুকোষী প্রাণীর দেহের কোষগুলাে সুগঠিত কলাতন্ত্র (Tissue system) গঠন করেনি। প্যারাজোয়ার অন্তর্গত পর্বটি হলাে Porifera (পরিফেরা)।
২। এন্টারােজোয়া (Enteroza)
এ সব বহুকোষী প্রাণীর দেহে কলাতন্ত্র গঠিত হয়েছে। ভূণস্তর অনুযায়ী এন্টারােজোয়াকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে, যথা—ডিপ্লেব্লাস্টিক এবং ট্রিপ্লোব্লাস্টিক।
ক) ডিপ্লোব্লাস্টিক বা দ্বিস্তরবিশিষ্ট প্রাণী (Diploblastic animals)
যে সব প্রাণীর ভ্রূণদেহে দুটি কোষস্তর (এক্টোডার্ম ও এন্ডােডার্ম) থাকে, তাদের দ্বিস্তরবিশিষ্ট প্রাণী বলে। যেমন– Cnidaria (নিডেরিয়া))।
খ) ট্রিপ্লোব্লাস্টিক বা ত্রিস্তরবিশিষ্ট প্রাণী (Triploblastic animals)
যে সব ভ্রূণদেহে তিনটি কোষস্তর (এক্টোডার্ম, মেসােডার্ম ও এন্ডােডার্ম) থাকে তাদের ত্রিস্তরবিশিষ্ট প্রাণী বলে। সিলােম (Coelom) বা দেহগহ্বরের উপস্থিতি অনুযায়ী এ সব প্রাণীকে নিম্নবর্ণিত তিনটি প্রধান গােষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
১। অ্যাসিলােমেটা (Acoelomata)
এ সব প্রাণিদেহে সিলােম অনুপস্থিত। অ্যাসিলােমেটার অন্তর্গত পর্ব হলাে- Platyhelminthes (প্লাটিহেলমিথেস)।
২। সিউডােসিলােমেটা (Pseudocoelomata)
এ সব প্রাণিদেহে দেহগহ্বর থাকলেও সেটি প্রকৃত সিলােম নয়। এর অন্তর্গত পর্ব হলাে Nematoda (নেমাটোডা)।
৩। সিলােমেটা (Coelomata)
এ সব প্রাণিদেহে প্রকৃত সিলােম আছে। সিলােমেটার অন্তর্গত পর্ব হলাে- Annelida, Arthropoda, Mollusca,Echinodermata এবং Chordata
কর্ডাটা পর্ব আবার তিনটি উপপর্বে বিভক্ত, যথা- Urochordata (ইউরােকর্ডাটা), Cephalochordata (সেফালােকর্ডাটা) এবং Vertebrata (ভার্টিব্রাটা)। প্রথমােক্ত দুটি উপপর্বকে একত্রে Protochordata (প্রােটোকর্ডাটা) বলে।
১. প্রধান পর্ব (Major Phyla)
যে সব পর্বের প্রজাতিসংখ্যা অনেক বেশি (পাঁচ হাজারের অধিক), প্রজাতির সদস্যরা বাস্তুতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং সুস্পষ্টভাবে পর্ব হিসেবে পৃথক সত্ত্বার অধিকারী সে সব পর্বকেই প্রধান (মুখ্য) পর্ব অর্থাৎ Major Phyla হিসেবে অভিহিত করা হয়ে থাকে ।
২. গৌণ পর্ব (Minor Phyla)
যে সব পর্বের প্রজাতিসংখ্যা নগণ্য, প্রজাতির বাস্তুতান্ত্রিক গুরুত্ব নেই বললেই চলে এবং শ্রেণিবিন্যাসগত অবস্থান অস্পষ্ট অথবা বিতর্কিত সে সব পর্বই গৌণ পর্ব অর্থাৎ Minor Phyla হিসেবে স্বীকৃত।
শ্রেণিবিন্যাস অনুযায়ী প্রাণিজগতে সর্বমোট ৩৩টি পর্ব রয়েছে।
