মেন্ডেলের সফলতার কারণ
মেন্ডেল বিভিন্ন উৎস হতে ৩৪ ধরনের মটরশুটি উদ্ভিদের বীজ সংগ্রহ করে আশ্রমের বাগানে প্রায় এক বৎসর প্রত্যেক ধরনের বীজের বিশুদ্ধতা পরীক্ষা করেন এবং শেষ পর্যন্ত তাঁর পরীক্ষায় ব্যবহৃত সাতটি চরিত্রের (trait) জন্য (কাত্রে দৈর্ঘ্য, ফুলের অবস্থান, ফুলেররং, ফলের বর্ণ, ফলের আকৃতি, বীজের বর্ণ এবং বীজের আকৃতি) একজোড়া করে বিপরীত বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন ১৪টি খাঁটি উদ্ভিদ নির্বাচন করেন।
প্রতি জোড়া বৈশিষ্ট্য পরস্পর বিপরীত ধর্মী। মটরশুটি উদ্ভিদের নির্বাচিত বৈশিষ্ট্যের প্রতিটি একটি মাত্র জিন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিল। বৈশিষ্ট্য নির্বাচনের বিষয়ে মেন্ডেল অত্যন্ত সৌভাগ্যবান ছিলেন। কারণ জটিল বৈশিষ্ট্য নির্বাচন করলে মেন্ডেল বংশগতির অন্তর্নিহিত নীতিগুলাে হয়তােবা আবিষ্কার করতে পারতেন না। মেন্ডেল একটি যথাযথ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করে সঙ্করায়ন পরীক্ষা পরিচালনা করেন।
অত্যন্ত সাবধানতার সাথে পরীক্ষণসমূহ নিয়ন্ত্রণ করেন এবং তিনি যে পরাগরেণু স্থানান্তর করেছেন তার দ্বারাই পরাগায়ন হয়েছে তা নিশ্চিত করেন। সঙ্করায়নকালে মেন্ডেল অপত্য অংশে একসাথে মাত্র একটি চরিত্র পর্যবেক্ষণ করেন এবং সম্পূর্ণ উপাত্ত (data) সংরক্ষণ করেন।
অতঃপর পরিসংখ্যান (Statistics) এর প্রয়ােগ দ্বারা এ উপাত্ত থেকেই লব্ধ ফলাফলের যুক্তিযুক্ত বিশ্লেষণপূর্বক এবং একটানা প্রায় এক দশকের নিরলস পরিশ্রম দ্বারা বংশগতির নিয়ম সম্পর্কে পার্টিকুলেট থিওরী (Particulate theory)উপস্থাপন করেন।
মেন্ডেল কেনো সফল হয়েছিলেন?
মেন্ডেল তার জিনতাত্ত্বিক পরীক্ষায় সফল হয়ে ছিলেন তার কিছু কারন ছিলো,যথা-
- ১) তিনি মটরশুঁটি গাছ নিয়ে পরীক্ষা করেছিলেন, এই গাছ স্বপরাগী। ফুলের বিশেষ গঠনের জন্য বিপরীত পরাগায়নের সম্ভাবনা কম থাকায় পরীক্ষায় ভুল হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম ছিল।
- ২) তিনি বিভিন্ন পরীক্ষায় যে সব উদ্ভিদ ব্যবহার করেছিলেন সেগুলো খাঁটি (pure) অর্থাৎ হোমোজাইগাস ছিল।
- ৩) তাঁর বিভিন্ন পরীক্ষায় প্রতিজোড়া জিনের একটি জিন অন্য জিনের উপর সম্পূর্ণ প্রকট (dominant) ছিল।
- ৪) মেন্ডেল যে সাতজোড়া চরিত্র নিয়ে কাজ করেছিলেন, সেগুলো ভিন্ন ভিন্ন ক্রোমোজোমে অবস্থিত বলে কোন লিংকেজ এর ঝামেলা ঘটেনি।
- ৫) মেন্ডেল অত্যন্ত সতর্কতা ও নিষ্ঠার সাথে তাঁর গবেষণার ফলাফল লিপিবদ্ধ করেছিলেন।